উপন্যাস সমাগম ৫

লেখক: সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
ধরণ: রচনাবলী - রচনাসংগ্রহ - রচনাসমগ্র (সংগৃহীত রচনা)
প্রকাশক: আনন্দ পাবলিশার্স
বাঁধাই: হার্ডকভার
আইএসবিএন: ৯৭৮৮১৭৭৫৬৪১৩৬
পৃষ্ঠা: ৬৭৬
ওজন: ১০৫০ গ্রাম

---

বইয়ের বর্ণনা

বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান ব্যক্তিত্ব সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর অনন্য আখ্যান শৈলী এবং চরিত্রগুলির গভীর মনস্তাত্ত্বিক অনুসন্ধানের মাধ্যমে বাংলা উপন্যাসে বিপ্লব এনেছিলেন। ১৯৬০-এর দশকে গঙ্গোপাধ্যায় যখন তাঁর প্রথম উপন্যাস "যুবক যুবতী" (যুবক এবং যৌবন) লেখেন, তখন এটি বাংলা কথাসাহিত্যে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে, যেখানে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এবং অর্থের সন্ধান ঐতিহ্যবাহী রোমান্টিক গল্পের স্থান দখল করে।

এই সময়কালে তাঁর লেখায় "অব্যাখ্যাতীত অস্থিরতা" বা "অস্পষ্ট অনিশ্চয়তা" - এই অনুভূতির অন্তর্নিহিত অনুভূতি ছিল - জীবনের অর্থের অস্থির অনুসন্ধানের একটি কেন্দ্রীয় বিষয়। তাঁর চরিত্রগুলি, মূলত সেই সময়ের যুবকরা, এমন একটি পৃথিবীতে তাদের পরিচয় খুঁজছিল যেখানে অস্তিত্বের ঐতিহ্যবাহী সংজ্ঞাগুলির আর কোনও অর্থ ছিল না।

লেখক হিসেবে তাঁর যাত্রায়, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় বাংলা উপন্যাসে নতুনত্বের সমার্থক হয়ে ওঠেন। অসাধারণ আখ্যানমূলক কারুকার্য , প্রাণবন্ত চরিত্র নির্মাণ এবং সামাজিক সচেতনতার দৃঢ় অনুভূতির মাধ্যমে, গঙ্গোপাধ্যায়ের রচনাগুলি মানব আবেগ, সংগ্রাম এবং সত্যের সন্ধানের গভীর, বহুমুখী অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করে। কয়েক দশক ধরে তাঁর রচনাগুলি, একবিংশ শতাব্দীতেও প্রাসঙ্গিক, তাদের প্রাণবন্ততা এবং প্রভাব বজায় রেখে।

এই খণ্ডে অন্তর্ভুক্ত উপন্যাস:

উপন্যাস সমাগমের পঞ্চম খণ্ডে তাঁর বারোটি উল্লেখযোগ্য রচনা রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে:
📖 আমি সে (আমিই সেই একজন) – একটি গল্প যা পরিচয় এবং আত্ম-আবিষ্কারের জটিলতাগুলি পরীক্ষা করে।
📖 বুকের মোদ্দে আগুন (হৃদয়ে আগুন) – মানুষের আকাঙ্ক্ষা এবং মানসিক অস্থিরতার গভীর আবেগগত অন্বেষণ।
📖 প্রকাশ্য দিবালোকে (প্রশস্ত দিবালোকে) – একটি প্রকাশক রচনা যা বাহ্যিক বাস্তবতার মধ্যে অভ্যন্তরীণ জীবনের সংগ্রামকে সম্বোধন করে।
📖 স্যাটার আরালে (সত্যের আড়ালে) – একটি দার্শনিক আখ্যান যা সত্য এবং অস্তিত্বের প্রকৃতি নিয়ে প্রশ্ন তোলে।
📖 সংসারে এক সন্ন্যাসী (পরিবারে একজন সন্ন্যাসী) – আসক্তিপূর্ণ পৃথিবীতে আধ্যাত্মিকতা এবং ব্যক্তিগত বিচ্ছিন্নতার উপর একটি প্রতিফলিত রচনা।
📖 কোথায় আলো (আলো কোথায়?) – জীবনের দিকনির্দেশনা এবং উদ্দেশ্যের একটি দার্শনিক অন্বেষণ।
📖 ভালোবাসার দুঃখ (ভালোবাসার দুঃখ) – ভালোবাসার মানসিক অস্থিরতার একটি মর্মস্পর্শী বর্ণনা।
📖 অভিমান (অহংকার) – একটি উপন্যাস যা অহংকার, অহংকার এবং ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের বিষয়বস্তু অন্বেষণ করে।
📖 কেউ জানে না (কেউ জানে না) – এমন একটি গল্প যা জীবন, প্রেম এবং অজানা সত্যের রহস্য উন্মোচন করে।
📖 মনে মনে খেলা (মনের খেলা) – মানুষের আত্মদর্শনের উপর একটি প্রতিফলিত আখ্যান।
📖 বন্ধুবান্ধব (বন্ধু এবং সঙ্গী) – সম্পর্ক, আনুগত্য এবং বন্ধুত্বের গতিশীলতা সম্পর্কে একটি গল্প।
📖 ভালো হতে চাই (আমি ভালো হতে চাই) – নৈতিক পছন্দ এবং ব্যক্তিগত বিকাশের আকাঙ্ক্ষার অন্বেষণ।

---

লেখক সম্পর্কে

সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় , জন্ম ৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৩৪ সালে বাংলাদেশের ফরিদপুরে , একজন প্রখ্যাত লেখক , খ্যাতিমান কবি এবং সাহিত্যিক ছিলেন। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন এবং কবিতা দিয়ে লেখক হিসেবে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। পরে তিনি উপন্যাস লেখায় রূপান্তরিত হন, যেখানে তিনি প্রচুর সাফল্য পান।

১৯৬৬ সালে প্রকাশিত তাঁর প্রথম উপন্যাস "আত্মপ্রকাশ" (আত্ম-প্রকাশ) কথাসাহিত্যের জগতে তাঁর প্রবেশের সূচনা করে। গঙ্গোপাধ্যায় "কৃত্তিবাস" সাহিত্য পত্রিকা প্রতিষ্ঠার জন্যও পরিচিত ছিলেন, যা বাঙালি লেখকদের জন্য একটি প্রভাবশালী প্ল্যাটফর্ম হয়ে ওঠে।

কথাসাহিত্যের পাশাপাশি, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর কবিতা এবং শিশুসাহিত্যের জন্য সমানভাবে বিখ্যাত ছিলেন। তিনি নীল লোহিত , সনাতন পাঠক এবং নীল উপাধ্যায় সহ বিভিন্ন ছদ্মনামে লিখতেন।

পুরষ্কার এবং সম্মাননা:

🏆 বুঙ্কিম পুরস্কার (১৯৮৩)
🏆 সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার (1985)
🏆 বাংলা সাহিত্যে অবদানের জন্য আনন্দ পুরস্কার ।
🏆 তাঁর সাহিত্যকর্ম এবং বাংলা গল্প বলার ক্ষেত্রে তাঁর অনন্য অবদানের জন্য অসংখ্য অন্যান্য পুরষ্কার।

সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ২৩শে অক্টোবর, ২০১২ তারিখে মারা যান, এক বিশাল সাহিত্যিক উত্তরাধিকার রেখে যান যা পাঠক এবং লেখক উভয়কেই অনুপ্রাণিত করে। তাঁর উপন্যাস, কবিতা এবং ছোটগল্প সহ তাঁর রচনাগুলি একাধিক ভাষায় অনূদিত হয়েছে এবং বাংলা সাহিত্যের একটি লালিত অংশ হিসেবে রয়ে গেছে।